রাত ৩:০৩ | বৃহস্পতিবার | ১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়া রাজনৈতিক দল ও জনগণের দায়িত্ব: ড. কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ জানুয়ারি ২০২৫

 

গণফোরামের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন। জাতীয় প্রেসক্লাব, ৫ জানুয়ারি
গণফোরামের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন। জাতীয় প্রেসক্লাব, ৫ জানুয়ারিছবি: প্রথম আলো

অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় ও সার্বিক সহযোগিতা করা দেশের সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের সভাপতি পরিষদের সদস্য সুব্রত চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্লজ্জ দলীয়করণের ফলে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করতে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যৌক্তিক সময় ও সার্বিক সহযোগিতা করা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব। যাতে তাঁরা অভীষ্ট সংস্কার কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আজ সময়ের প্রয়োজনে জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংবিধান সংশোধন কিংবা যুগোপযোগী করা রাষ্ট্রের জন্য চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের অর্জিত ও মীমাংসিত বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে তা আমাদের অগ্রসরমাণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বাধাগ্রস্ত করবে। এ ব্যাপারে আমাদের সবার দায়িত্বশীল হওয়া কর্তব্য।’

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশের অঙ্গীকার ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। বিগত ৫৩ বছরেও আমরা কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ অর্জন করতে পারিনি। আবার ’২৪–এর গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা হচ্ছে একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার। এ ক্ষেত্রে ছাত্র-জনতার মধ্যে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে। দেশ গড়ার কাজে তারুণ্যের এই শক্তিকে কাজে লাগতে হবে। এটা যাতে বিনষ্ট না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষিত একটি গণতান্ত্রিক ও মানবিক বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের চেতনা থেকে যেমন আমরা সরে আসতে পারি না, তেমনি ’২৪–এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাও নস্যাৎ হতে দিতে পারি না।’

লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনানোর আগে ড. কামাল হোসেন উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু অর্জন করলাম। জনগণের ঐক্যকে সুসংহত করতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। জনগণের ঐক্য সুসংহত হলে সবকিছু অর্জন করা সম্ভব। বিভাজন হলেই শক্তি কমে যাবে।’

এ সময় কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘সমাজে ভয়াবহ আকার ধারণ করা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত সুষ্ঠু সমাজের মাধ্যমে আমাদের মূল লক্ষ্যগুলোকে অর্জন করা সম্ভব। জনগণের ঐক্যের শক্তি গড়ে তুলতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে ইমেরিটাস সভাপতি হিসেবে আছেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেন। দলটির সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। এর সভাপতি পরিষদের সদস্য হিসেবে আছেন এস এম আলতাফ হোসেন, সুব্রত চৌধুরী, এ কে এম জগলুল হায়দার, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ, মোশতাক আহমেদ, সেলিম আকবর, সুরাইয়া বেগম, হারুনুর রশিদ তালুকদার, নিলেন্দু দেব, আনসার খান, আবদুল হাসিব চৌধুরী, রতন ব্যানার্জি, হাফিজ উদ্দীন, আবুল হাসনাত, হিরণ কুমার দাস, আইয়ুব খান ফারুক, গোলাম হোসেন, কাজী মেজবাহ উদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী বদল।

 

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *