সকাল ৯:০৭ | বৃহস্পতিবার | ১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাংকে গুরুতর অনিয়মের বিশেষ প্রতিবেদন দেবে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান

নিউজগেট২৪
নিজস্ব প্রতিবেদন
১০ জুলাই ২০২৪

এখন থেকে ব্যাংকে গুরুতর আর্থিক অনিয়মের ঘটনা ঘটলে বা পাওনাদারের পাওনা মেটানোর মতো ব্যাংকের কাছে সম্পদ যথেষ্ট কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ হলে ‘বিশেষ প্রতিবেদন’ তৈরি করে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাবে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ সংক্রান্ত ‘ব্যাংক-কোম্পানি বহিঃ নিরীক্ষণ বিধিমালা, ২০২৪’ শীর্ষক এক সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে বলা হয়েছে এখন থেকে দেশের ব্যাংকগুলোর ৯ মাসের কার্যক্রমের ওপর অন্তর্র্বতীকালীন নিরীক্ষা হবে। অন্তর্র্বতীকালীন এ নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিলের জন্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি ব্যাংকে টানা তিন বছরের বেশি নিরীক্ষা করতে পারবে না। আর একটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুই দফায় তিন বছর করে ছয় বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো ব্যক্তি, ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো এজেন্ট বা প্রতিনিধি বা ব্যাংকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি নিরীক্ষক বা নিরীক্ষা দলের সদস্য হতে পারবেন না।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের ৯ মাস ভিত্তিক যে নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করবে। সেখানে ঋণ শ্রেণীকরণ ও ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিংয়ের অনিয়ম, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া তথ্য-উপাত্ত বা নথিপত্রে প্রাপ্ত অনিয়ম, খেলাপি ঋণের তথ্য যথাসময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবিতে দাখিল করা হয়েছে কি না, সম্পদ-বিনিয়োগের শ্রেণীকরণ ও এর বিপরীতে প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম থাকলে তা চিহ্নিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিবেদন জমা দেবে।
অন্তর্বর্তীকালীন, নিয়মিত প্রতিবেদনের পাশাপাশি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান চাইলে বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ প্রতিবেদনও তৈরি করতে পারবে। কোনো ক্ষেত্রে এই বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে, তা-ও নীতিমালায় সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের কোনো ধারা লঙ্ঘিত হলে, অসততা ও প্রতারণা-সংক্রান্ত কারণে কোনো ফৌজদারি অপরাধ ঘটলে, ব্যাংকের সংরক্ষিত মূলধন ওই ব্যাংকের আবশ্যক মূলধনের ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে, পাওনাদারের পাওনা পরিশোধের নিশ্চয়তা বিঘ্নিত হলে, কোনো গুরুতর আর্থিক অনিয়মের ঘটনা ঘটলে বা পাওনাদারের পাওনা মেটানোর মতো ব্যাংকের সম্পদ যথেষ্ট কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হলে বিশেষ প্রতিবেদনের মাধ্যমে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।
রপ্তানি প্রণোদনা, রপ্তানি ভর্তুকি, নগদ সহায়তার আবেদনপত্র নিরীক্ষণে অনিয়ম; দেশের প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধান অনুসারে সকল ধরনের প্রযোজ্য রাজস্ব সংগ্রহ করে সরকারি কোষাগারে জমা; কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী নস্ট্রো হিসাব যথাযথভাবে সমন্বয়; ব্যাংকের সুশাসন ব্যবস্থায় ত্রুটি-বিচ্যুতির বিষয়েও নিরীক্ষা বিভাগ ব্যবস্থাপনা প্রতিবেদন প্রতিবেদন পাঠাবে।
অন্তর্বর্তীকালীন ও বিশেষ প্রতিবেদনের পাশাপাশি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা প্রতিবেদন, চূড়ান্ত প্রতিবেদনও তৈরি করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যেসব ব্যাংকের হিসাব বছর জুলাই থেকে শুরু, তাদের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর হবে।

 

জা.ই/ এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *