সন্ধ্যা ৭:৪১ | বৃহস্পতিবার | ১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

সাবিহ উদ্দিনের স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল : আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজকে পরিবর্তন করা

নিজস্ব প্রতিবেদক

০২ নভেম্বর ২০২৪

 

 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজকে পরিবর্তন করা। আমরা ছাত্র জীবনে সেই ধিক্ষাই পেয়েছিলাম। আজ শনিবার বিকেলে কুটনীতিক সাবিহউদ্দিন আহমেদের স্মরণ সভায় তিনি একথা বলেন। সাবিহ উদ্দিনকে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন তার নিকটসহকর্মীসহ নানা পেশার নাগরিকরা।

২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাবিহউদ্দিন আহমেদ। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৬ বছর। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার শাসনামলে সাবিহউদ্দিন আহমেদ যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার ছিলেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষে যোগ দেন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে। তিনি তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব হন সাবিহ উদ্দিন আহমেদ। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর সাবিহ উদ্দিন আহমেদ বিএনপির রাজনীতি সক্রিয়ভাবে যোগ দেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলে সদস্য ছিলেন।

সাবিহ উদ্দিনের বর্ণাঢ্য জীবন-কর্ম তুলে ধরে তাকে স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সাবিহসহ আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি শুরু করেছিলাম আমাদের একটা লক্ষ্য ছিলো এই সমাজটাকে পরিবর্তন করব, আমরা বদলে দেবো। সেটা সেই সময় সম্ভব হয়নি, সাবিহ চলে গেছেন সরকারি চাকুরিতে.. সরকারি চাকুরিতে গেলেও কখনো সেই লক্ষ্য থেকে সরে যায়নি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাবিহ উদ্দিন ছিলেন রিয়াল ন্যাশনালিস্ট। দেশ ও জনগনের প্রশ্নের কোনো কম্প্রমাইজ নেই। আন কম্প্রমাইজিং ছিলেন। এমন মানুষ পাওয়া দুস্কর। আমরা তার পরিবারের জন্য দোয়া করি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাবিহ যেখানেই ছিলো সেখানেই দেশের জন্য কাজ করেছে, জনগনের জন্য কাজ করেছে। সবচেয়ে বেশি আমার মনে পড়ে যে, যখন তিনি আমাদের ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়ার সাথে কাজ করেছেন তখন দেখেছি, তিনি সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করেছেন।

শেখ হাসিনার শাসনমালে সাবিহ উদ্দিন ওই সময়ে সরকারের রোষানলে নির্যাতিত হওয়ার তুলে ধরেন বলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওই সময়ে তার ওপরে প্রচন্ড আক্রমণও হয়েছিলো, রিয়াজ রহমানের গুলি লেগেছিলো, সাবিহ উদ্দিন আহমেদের গাড়িটা পুড়িয়ে দিয়েছিলো। এই সময়গুলো আমরা পার করেছি। তার চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা যারা এক সাথে ছিলাম তাদের কাছে এটা বেদনার। সাবিহ‘র ছবিটা এখানে দেখে আতকে উঠলাম। অফুরন্ত প্রাণশক্তি ছিলো তার। মনে হয়েছে টগবক করছে সবসময় জীবনী শক্তি নিয়ে। কোনো কিছুতে ভেঙে পড়ার লোক ছিলো না, লড়াই করেছে শেষ পর্যন্ত। আজকে সে থাকলে সবচেয়ে খুশি হতো ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ দেখে।টি ভেবেছেন, দশের কথাটি ভেবেছেন। তার মধ্যে স্বার্থপরতা ছিলো। দেশপ্রেমের প্রশ্নের কোনো আপোষ তিনি করেননি। বাংলাদেশে খুব মানুষই পাবে যে, আপন স্বার্থ ভুলে দেশ ও জনগনের স্বার্থ নিয়ে কাজ করা। তিনি সব সময়ে এটা লালন করেছেন।

রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স হলে মরহুম কুটনীতিকের পরিবারের পক্ষ থেকে এই স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সাবিহ উদ্দিনের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ওপরে স্মৃতিচারণ করেন প্রবীণ সম্পাদক শফিক রেহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মাহফুজ এনাম, এবিএম শাহেদ আখতার, সাবিহ উদ্দিন আহমেদর ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ অবসরপ্রাপ্ত কুটনীতিক, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার নাগরিকগণ। অনুষ্ঠানে সাবিহ উদ্দিনের সহধর্মিনী রওনক আহমেদ, ছেলে সাইয়াব আহমেদ, বিএনপি মহাসচিবের সহধর্মিনী রাহাত আরা বেগমসহ নিকট স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।

 

জা ই / এনজি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *