রাত ৯:২৪ | বুধবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১লা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমসহ নানা দিক নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ সেপ্টম্বর

 

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম, নির্বাচনী রোডম্যাপ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, পাহাড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, ছাত্র রাজনীতি ও সাংগঠনিক নানা দিক নিয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক সূত্রে এটি জানা গেছে। গত সোমবার রাতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সমসাময়িক এসব বিষয়ে আলোচনার পর গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়, বরং ক্যাম্পাসে ইতিবাচক রাজনীতির ধারা চালু করতে চায় দলটি। কারণ হিসাবে দলটি বলছে, দেশ গঠনে ছাত্র রাজনীতির ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে। ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ’৬২ সালের পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা, ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনের আন্দোলনের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির বড় ভূমিকা রয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের বিষয়টি আলোচনায় আনেন। তারা বলেন, বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু গত ১৫ বছরের গুম, খুন, অন্যায়-নির্যাতনের দায়ে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না। ডাক্তার, আইনজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গে আলোচনার কথা, কিন্তু দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেই। দেশ থেকে স্বৈরাচার বিদায় হলেও এখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো রোডম্যাপ দেওয়া হয়নি।

স্থায়ী কমিটির নেতারা বলেন, দেশ চালায় মূলত রাজনীতিবিদরা। এই সরকারকে বুঝতে হবে আওয়ামী লীগ শেষ হয়েছে শুধু ভারতের সহযোগিতায় দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে। ফলে বর্তমান সরকার নির্বাচন দিতে দেরি করলে দেশ আবারও শেষ হয়ে যাবে। জনগণের চাহিদার গুরুত্বকে তাদের উপলব্ধি করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে কোনো কোনো নেতা বলেন, স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলার চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করা হলেও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ক্ষেত্রে ভিন্ননীতি বর্তমান সরকারের। দেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই পালিয়ে বা আত্মগোপনে রয়েছে। এতে ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবা পেতে জনগণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোথাও কোথাও চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ব্যাপারে অর্ন্তর্বর্তী সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা আরও ভেঙে পড়তে পারে।

এই বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম, স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি অঞ্চলে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্থায়ী কমিটির নেতারা। বৈঠকে কেউ কেউ মত দেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ইন্ধনে তার দোসররা দেশে অস্থিরতা করার চেষ্টা করছে। পাহাড়ে হঠাৎ অস্থিরতা কেন হচ্ছে তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এর পেছনে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্তর্র্ব্তী সরকারকে কঠোর হাতে সন্ত্রাসীদের দমন করার পরামর্শ দেন কেউ কেউ।

 

জা ই / এনজি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *