সন্ধ্যা ৬:৫৫ | শনিবার | ২৪ মে, ২০২৫ | ১০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২, গ্রীষ্মকাল | ২৫ জিলকদ, ১৪৪৬

আমরা বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপোষ নয়— নজরুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ মে ২০২৫

 

‘এক-দেড় মাসে জুলাই সনদ হলে সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বরে কেনো নয়’ তার কারণ জানতে চেয়েছেন নজরুল ইসলাম খান।

সোমবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই প্রশ্ন করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ পত্রিকায় এসেছে, নির্বাচন কমিশন বলছে তারা জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। গতকাল(রোববার) জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের যিনি ভাইস চেয়ারম্যান আলী রীয়াজ সাহেব উনি বলেছেন, আমাদের আলোচনা প্রায় শেষ… আমরা এই মাসের মধ্যেই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় যাবো। অর্থাৎ সেটা কি? যেসব বিষয় আমরা একমত হলাম.. এটার একটা তালিকাবদ্ধ করা… যদি আরেকটু কিছু করা যায় সেটা করা… করে একটা সনদ তৈরি করা তাতে করে সেখানে সবাই দস্তখত করতে পারে।”

‘‘ সেটা করতে আর কত দিন লাগতে পারে? ম্যাক্সিমাম একমাস থেকে দেড় মাস… এর বেশি তো না। দ্যান উই সাইন এ ডকুমেন্ট… আমরা একটা সনদে দস্তখত করলাম। এর মধ্যে যেটা অধ্যাদেশের মাধ্যমে পুরণ করা সম্ভব, কয়েকদিনের মধ্যে যেসব অধ্যাদেশ জারি হতে পারে। আর সেগুলো সম্ভব না সেগুলো পরবর্তি সংসদে আমরা উপস্থাপন করার জন্য তো একমত হলাম। তাহলে আপনার(অন্তবর্তী কালীন সরকার) নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে করতে বাধাটা কোথায়?

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ আপনারা যা বলছেন, তাতেই তো কোন বাধা নাই।এখন যদি বলেন যে, আরও দেরি করতে হবে। তাহলে কারণটা তো তাকেই বলতে হবে যে কেনো করতে হবে? তাতো বলছেন না তারা।”

‘‘ এখন কারণ যদি গোপন থাকে যে আমরা সংগঠিত হতে একটু সময় লাগবে, আপনি কারো কারো সঙ্গে জোট বানানোর চেষ্টা করছেন সেই জোটটা বানার জন্য তো সময় লাগবে। আরে ভাই আপনি ক্ষমতায় যাওয়ার স্বার্থে আপনি সংগঠিত হওয়া বা জোট বানানো ইত্যাদি করার জন্য যে সময় ওইটা নেয়ার জন্য গত ১৭ বছর ধরে যারা তার গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে, আমাদের যে তরুন প্রজন্ম আজ পর্যন্ত ভোটই দিতে পারে নাই এবং দেশে একটা নির্বাচিত সরকার কায়েম হওয়ার মাধ্যমে দেশে রাজনীতি, দেশের অর্থনীতি যে সমাজ আরও সংগঠিত এবং সক্ষম হওয়ার যে সুযোগ যেটা থেকে বঞ্চিত রাখবেন? এটা কি যুক্তিসঙ্গত?”

তিনি বলেন, ‘‘ আমরা পরিস্কার বলতে চাই, অবশ্যই আমরা সংস্কার চাই। যেসব সংস্কার প্রয়োজন, যে সব সংস্কার সম্ভব, যেসব সংস্কার ছাড়া একটা সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না এর সবগুলো নিয়ে আমরা করতে চাই।”

‘‘ আমরা এটাও চাই যে, যত দ্রুত সম্ভব জনগনের ক্ষমতা জনগনের হাতে ফিরিয়ে দাও। যাতে করে এমন একটা সরকার প্রতিষ্ঠা হয় যে, সরকার জনগনের ভোটে নির্বাচিত হবে, জনগনের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে এবং জনগনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। আমি মনে করি, আমাদের এই আকাংখায় কোনো ত্রুটি নাই… এই আকাংখা ন্যায্য।”

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে ‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করণ ও তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিবন্ধকতা দুরীকরণের দাবি’ এই আলোচনা সভা হয়।

‘আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ কেউ কেউ প্রচারের চেষ্টা করছে যে, আমরা নাকি আওয়ামী লীগকে পূনর্বাসন করতে চাই। আচ্ছা ভাবেন একবার, এই দলটা যে দলের সরকারটা সবচেয়ে বেশি বিএনপির নেতা-কর্মীদের গুম করেছে, খুন করেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে একটা মিথ্যা অভিযোগে ছয়টা বছর কারারুদ্ধ করে রেখেছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে আসার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে, তাকে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছিলো, তার ভাই মালয়েশিয়ায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে….বিএনপির মহাসচিবসহ এমন কোন নেতা আছে যার বিরুদ্ধে অন্তত ৫০টা মামলা নাই…।”

‘‘ আমাদের কথা বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের পূনর্বাসন দেবে, আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবে… এই ফাইজলামির কোনো মানে হয়। এটা কি সম্ভব? আমরা বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপোষ কেউ করবে? আরে আমরা তো নাই… অন্য কেউ করতে গেলে তাকে পর্যন্ত আমরা বাধা দেবো। এসব ফাইজলামী করার কোনো মানে হয় না। আছে কিছু কিছু লোক নিজেদের বুদ্ধিমান দাবি করেন কিন্তু তাদের বুদ্ধি কারো পক্ষে বা বিপক্ষে যখন যায় তখন আর বুদ্ধিমান সঠিক থাকে না।”

১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক জাতীয় পার্টির(কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম খান, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, জাগপার ইকবাল হোসেন প্রধান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

 

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *