রাত ১০:৫৭ | শনিবার | ২৪ মে, ২০২৫ | ১০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২, গ্রীষ্মকাল | ২৫ জিলকদ, ১৪৪৬

পুঁজিবাজারে ধস, রাস্তায় কফিন মিছিল বিনিয়োগকারীদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
১৮ মে ২০২৫

 

পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে কফিন নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন দেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা।

রোববার (১৮ মে) রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে এই ব্যতিক্রমধর্মী বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকালে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের অপসারণ দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভের আয়োজক বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে বিনিয়োগকারীরা প্রথমে কফিন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে একটি মিছিল বের হয়ে হাটখোলা মোড় হয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে তারা প্রতীকী কফিন নিয়ে গায়েবানা জানাজা পড়েন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিনিয়োগকারীরা বলেন, শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক দরপতনের কারণে লাখো বিনিয়োগকারী পথে বসেছেন। মাকসুদের নেতৃত্বে বাজার থেকে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা মূলধন উধাও হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, পুঁজি হারিয়ে অনেক বিনিয়োগকারী চরম হতাশায় পড়েছেন, কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নিচ্ছেন।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ পুঁজিবাজার বোঝেন না। তার নেতৃত্বে বাজারে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। তারা আরও বলেন, গতকাল এক বৈঠকে তিনি অংশীজনদের হুমকি দিয়েছেন, যাতে বাজার সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক তথ্য গণমাধ্যমে না আসে এবং তার বিরুদ্ধে কেউ আন্দোলন না করে। বিনিয়োগকারীদের মতে, এই মানসিকতা দায়িত্বশীল পদে থাকা কারও হতে পারে না।

এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের পুঁজিবাজার রক্ষা করা আমাদের কাজ নয়- মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের মতে, অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এ খাতকে রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব সংস্থার দায়িত্ব রয়েছে।

বিনিয়োগকারীরা বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ। এর আগেই, বাজারের এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আরও অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হবেন। তারা বলেন, কফিন নিয়ে রাস্তায় নামা আমাদের বাধ্য হয়েই করতে হয়েছে। এখন যদি পরিবর্তন না আসে, তাহলে আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়ানো হবে। তাদের একটাই দাবি— বাজার বাঁচাতে হলে খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার ঘাটতি, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ এবং অর্থনীতি ঘিরে নানা অনিশ্চয়তা শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর ধারাবিকতায় রোববার (১৮ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। পাশাপাশি, উভয় বাজারেই কমেছে সবকটি মূল্যসূচক।

 

টি আই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *