রাত ৮:৫৫ | শনিবার | ২৪ মে, ২০২৫ | ১০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২, গ্রীষ্মকাল | ২৫ জিলকদ, ১৪৪৬

শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন , লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
১৪ মে ২০২৫

দেশের শেয়ারবাজারে অব্যাহত ঢালাও দরপতন চলছে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় বুধবারও (১৪ মে) শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে। এতে নয় কার্যদিবসের মধ্যে বাজারটিতে সব থেকে কম লেনদেন হয়েছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। মাঝে কিছু সময়ে জন্য প্রধান মূল্যসূচক সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হয়। কিন্তু তা আধাঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়নি। বরং লেনদেনের শেষদিকে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায় এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী। ফলে ঢালাও দরপতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় নাম লেখানোর পাশাপাশি বাজারে ক্রেতা সংকটও প্রকট হয়ে উঠে। ফলে কমে যায় লেনদেনের গতি। শেয়ারের দাম কমিয়ে অনেকে লোকসানে শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করেও ক্রেতা না থাকায় বিক্রি করতে ব্যর্থ হন।

দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে মাত্র ৬১টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯২টির। ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১৫৩টির দাম কমেছে। আর ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৮টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৭০টির দাম কমেছে এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২১টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৮ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৯১ পয়েন্টে নেমে গেছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ২৯ এপ্রিলের পর বাজারটিতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার। ১০ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্র্যাক ব্যাংক, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, সিটি ব্যাংক, ফাইন ফুডস, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৭টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

 

টি আই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *