নিজস্ব প্রতিবেদক
০৪ মে ২০২৫
ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক বিএনপি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে থাকবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব দলের এই অঙ্গীকারের কথা র্ব্যক্ত করলেন।
তিনি বলেন, আমরা নির্দ্বিধায় দৃঢ়চিত্তে স্পষ্ট করে বলতে পারি, আমরা বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতে থাকব। সে গভমেন্টে থাকি আর না থাকি যেখানেই থাকি, এই ব্যাপারে আপনাদেরকে আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারি। তবে আমরা আপনাদেরকে নিশ্চিত করতে পারি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি শুধু নয় এটা আমাদের বিশ্বাস, আস্থা এবং এটাকে আমরা যদি কখনো সুযোগ পাই সরকারিভাবে সেখানেও আমরা এটাকে স্টাবলিশ করবো, না পেলে বিরোধী দলে থাকলে সেখানেও আমরা এটাকে স্টাবলিশ করার জন্য লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাবো।
জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্পাদক পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকরা অংশ নেন।
গণমাধ্যমের ওপর অতীতে নিপীড়ন নির্যাতন এবং বিভিন্ন কালা-কানুনের বিরুদ্ধে দলের শক্ত অবস্থানের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ব্যাপারে আমরা লড়াই করে চলেছি, এখনো করছি। খুবই স্পষ্ট ভাষায় দৃঢ়ভাষায় আমরা বলতে চাই, আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেয়ার যে ব্যাপারটা আছে সেটা আমরা সমর্থন করব না। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়টি ২০১৬ সালে ঘোষিত ‘ভিশন-২০৩০’ ২০২৩ সালে প্রণীত ৩১ দফার রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে সংস্কার কর্মসূচিতে রয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে একরকম প্রচারনা চালানো হয় যে, আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে, প্রায় বলা হয় আমরা সংস্কার না নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কার বিষয়টা শুরু হয়েছে আমাদের দ্বারা। আমরাই একদলীয শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় গেছি, আমরাই আপনার পার্লামেন্টারি ফ্রম অব গভার্মেন্টে গেছি প্রেসিডেন্ট ফ্রম অব গভার্মেন্ট থেকে, আমাদের অনেক আপত্তি সত্ত্বেও আমরা কেয়ারটেকার গভমেন্টকে সংবিধানে নিয়ে এসেছি, এগুলো বাস্তবতা। এই বাস্তবতা থেকে অযথাই আমাদেরকে আবার প্রশ্নবিদ্ধ করে অন্য পথে দেখানোর চেষ্টা করা এটার পেছনে কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে।
বিএনপিই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, চারটি সংবাদপত্র ছাড়া সমস্ত সংবাদ পত্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় আসলেন তিনি নিষিদ্ধ সংবাদপত্রগুলো চালু করেছেন, স্বাধীনতা দিয়েছেন। আমরা বলি না যে, আমরা একেবারেই ধুয়া তুলশি পাতা। কিন্তু এই কথা নিসন্দেহে বলতে পারি যে, আমরা নিসন্দেহে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার স্বাধীনতার জন্য অনেক বেশি কাজ করেছি। আজকের যে আকাশ মাধ্যম এটা কিন্তু আমাদের দ্বারাই শুরু করা এবং অনেকগুলো মিডিয়া আছে যেগুলো আমাদের সময়ে তৈরি করা। আমাদের সময়ে সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীর যে নির্যাতন-নিপীড়ন হয়েছে সেটা তুলনামূলকভাবে নিসন্দেহে অনেক কম হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত যেটা বিশ্বাস করি, আজকেও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের একটা বিবৃতি বেরিয়েছে, আমি মনে করি এটা মুক্ত সংবাদপত্রের স্বাধীনতার চর্চার জন্য শক্তিশালী একটা ভূমিকা রাখবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি। অনেক রকম ঘটনা চলছে, অনেক রকম টানা হেছড়া চলছে। তবে একটা কথা কি? গণতন্ত্র যদি আমরা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করতে চাই গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে, চিন্তা-ভাবনাগুলোকে গণতান্ত্রিক করতে হবে। আমি মনের মধ্যে যা বলব সেটাই সঠিক তাহলে আমরা সেভাবে গণতন্ত্রকে চর্চা করতে সক্ষম হবো না। একইভাবে সংবাদমাধ্যমগুলোকে তারা আমার কথা বললে ঠিক আছে। আমার কথা না বললে ঠিক নেই এই চিন্তাভাবনাও কিন্তু আমার গণতান্ত্রিক যে চিন্তাভাবনা সেটাকে শক্তিশালী করবে না। সংকটটা কোথায়? সংকট তো গণতন্ত্রই তো নেই। ১৫ বছর ধরে লড়াই করলাম সেজন্যে, যে গণতন্ত্র উত্তরণের জন্যে।’২৪ জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে.. স্টুডেন্ট লিডারস তাদের জন্য সম্ভব হয়েছে একটা ফ্যাসিস্ট রোলাম ও রেজিমকে সরিয়ে একটা সুযোগ সৃষ্টি করা যে সুযোগে আমরা একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুরু করতে পারি।
তিনি বলেন, পলিটিনশিয়ালিটি দেখা দিয়েছে, সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রাতারাতি হয় না। গণতন্ত্র প্রাকটিসের জিনিস…ওটাকে চর্চা করতে হয়। যেমন একটা গাছকে বড়ো করতে হয় তাকে নিয়মিত পানি দিতে হয়ৃ চর্চা করতে হয় সেইভাবে। আমি হঠাৎ করে বলে ফেললে গণতন্ত্র হয় না। আরেকটায় গণতন্ত্র হয় না যে এটাই করতে হবে, অন্য কোনো কিছু হবে না। এই যে মানসিকতা, এই মানসকিতা কিনতু আমাকে গণতন্ত্র চর্চা করতে দেবে না। আর একটা বড় জিনিস হচ্ছে, জনগনের ওপর আস্থা রাখতে হবেৃ তার চিন্তাভাবনা, তার রায়, তার মত এগুলোতে আস্থায় আনতে হবে।
নিজের বাবা সাবেক মন্ত্রী মির্জা রুহুল আমিনের কথা উল্লেখ করে ছেলে ফখরুল বলেন, আমার বাবা তিনি কিন্তু মুসলিম লীগ করতেন আপনারা অনেকে জানেন। কিন্তু তিনি চিন্তাভাবনায় কথা-বার্তায় তখন দিনের তুলনায় অনেক আধুনিক ছিলেন। তিনি সংস্কৃত পড়েছে, পার্সিও পড়েছেন। তিনি পার্সিতে বলতেন, হ্যাম চু দিগার মিচথ, আমি ছাড়া আর কেউ নেই, আমিই আছি সর্বত্র। আর সংস্কৃতে আছে, এক ম্যা বো দ্বিগে, আমি একমাত্র। এই যে আমি এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার দরকার। আমাদের সংবাদমাধ্যমের এই চর্চাটা বেশি করা দরকার। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যম আছেন তারা ভাবছেন তারা যা বলছেন ওইটাই সঠিক.. ওটার বাইরে কেউ বলতে গেলে তিনি হয়ে যাচ্ছে ফ্যাসিস্টদের দোসর অথবা ভারতীয় দোসর, অথবা আওয়ামী লীগের দোসর। অলরেডি ইতিমধ্যে আমার সেই বদনাম শুরু হয়েছে, এটা আপনারা অনেকে ভালো করে জানেন। ওই জন্য বলছি, দূর্ভাগ্যজনক, কষ্টকর। আমরা জ্ঞানত কখনো দেশের বিরুদ্ধে জাতির বিরুদ্ধে কাজ করার কথা চিন্তা করি না। একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধ দেশের ভিত্তি বলে তার কথাও সমস্বরে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে ও পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বনিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবির, কালের কন্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলীসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গণমাধ্যমের সম্পর্ক ইতিবাচক হবে প্রত্যাশা করে জাতীয় নগারিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, যে মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতিশ্রুতি আমরা সবাই দিচ্ছি, সেটি আরও কীভাবে কার্যকর করা যায়, সেই বিষয়ে নিজেদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা করে রূপরেখা তৈরি করতে পারলে আমাদের জন্য ভালো হবে। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত আসা উচিত। আমি মনে করি, সেই সংস্কারের রূপরেখাগুলো এলে এবং বাস্তবায়ন হওয়া শুরু করলে আমরা বলতে পারবো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে গণমাধ্যমের পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র চর্চার জন্য, মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য, মুক্ত গণমাধ্যম অতি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড। ফলে মত প্রকাশের অধিকার হরণ থেকেই আমাদের আন্দোলনের যাত্রা শুরু। তিনি বলেন, মুক্ত গণমাধ্যমের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো লড়াই করেছে।
তিনি আরও বলেন, মিডিয়া এবং ফ্যাসিজমের সম্পর্ক বিগত সময়গুলোতে কী ছিল এবং মিডিয়ার ভেতরে যে ফ্যাসিজম প্রবেশ করেছে, সেখান থেকে মিডিয়াকে আমরা কীভাবে বের করতে পারবো, সেই বিষয়ে স্পষ্ট রূপরেখা প্রয়োজন। কারণ আমরা দেখছি, মিডিয়া এবং ফ্যাসিজমের যে সম্পর্ক বিগত সময়ে ছিল, সেই সম্পর্ক থেকে এবং আদর্শিক আধিপত্যের জায়গা থেকে যদি মিডিয়া বের না হয়, তাহলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তীকালে আমরা যে মুক্ত গণমাধ্যমের প্রত্যাশা করি এবং জনগণের মিডিয়ার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত হবে না। মিডিয়ার সুশাসনের বিষয়টি মিডিয়ার ভেতর থেকেই নিশ্চিত করা উচিত। সেই বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।
গত বছরের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালনের পরিবেশ আর ২০২৫ এর পরিবেশে ভিন্নতা রয়েছে মন্তব্য করেছেন সম্পাদক পরিষদের সহ-সভাপতি ও নিউ এজ-এর সম্পাদক নুরুল কবির। কারন হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সরকার প্রধানদের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। রাজনীতিবিদদের উপর সংবাদ কর্মীদের কাজের স্বাধীনতা নির্ভর করে। নানা প্রতিকুলতার মধ্যে কাজ করতে গিয়ে সংবাদকর্মীদের অনেক ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়।
বিগত সরকারের বিষোদগার করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিদেশে বসে শেখ হাসিনা নানা বক্তব্য দিচ্ছেন। সেগুলো প্রচার হচ্ছে, কিন্তু নিয়ন্ত্রণের ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এগুলো নিয়ন্ত্রণের যোগ্য কিনা জানতে চান তিনি। এসব প্রচার নিয়ন্ত্রণ করা হলে স্বাধীনতা খর্ব হবে কিনা তাও ভাববার বিষয় বলে মনে করেন তিনি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, গনমাধ্যমের স্বাধীনতা মানে শর্তহীন স্বাধীনতা নয়। অন্যের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন না করে স্বাধীনতার চর্চা না হলে সেটা হবে স্বেচ্ছাচারিতা। গনমাধ্যমের একটা নীতিমালা থাকা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। তবে গসরকার যেন গনমাধ্যমের গলা টিপে না ধরতে পারে সে ব্যবস্থা থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমরা একটা ভয়হীন সমাজ গড়তে চাই। রাষ্ট্র এমন আইন করতে পারবে না যাতে সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ হয়।
গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, আমাদের কথা বলতে দিতে হবে, লিখতে দিতে হবে, প্রশ্ন করতে দিতে হবে। তাহলেই গণমাধ্যম মুক্তির স্বাদ পাবে। তিনি বলেন, যে দেশে প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকের চাকরি যায়, সেই দেশে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি। খুব অবাক লাগে, আমি বিস্মিত হই। জানি না আমি কাকে দায়ী করবো। আমি কি সরকারকে দায়ী করবো, না, মালিককে দায়ী করবো, না, সাংবাদিক ইউনিয়ন কী করেছে। আমাদের সম্পাদক পরিষদ, যেটাতে আমি প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে আছি, ট্রেজার হিসেবে আছি। আমি মনে করি আমরাও ব্যর্থ হয়েছি। যাই হোক আত্মসমালোচনা আমাদের দরকার যে, আমরা কতটুকু করতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, তবে এটা স্বীকার করতেই হবে যে, পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে অনেকখানি। একবছর আগে যে অবস্থা ছিল, সেই অবস্থা এখন আর নেই। অনেকখানি পাল্টেছে। তবে আমার হতাশ হচ্ছি-বেশ কিছু অ্যাকশানের কারণে।
সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে ১৮ মাসে ২০০ শতাধিক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪২ জন কর্তব্যরত অবস্থায় মারা গেছেন। বাংলাদেশেও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের রক্তধারা রয়েছে। দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধেও সাংবাদিকরা প্রাণ দিয়েছেন। সুতরাং গণমানুষের মুক্তির জন্য আমরা আছি। স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচারিতা নয়। আমরা যেন দায়িত্বশীল হই, আমরা যেন গণআস্থা ফিরিয়ে আনতে পারি। সে চেষ্টা আমাদের করতে হবে। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে অনেক গণমাধ্যম বন্ধ হয়েছে, অনেকে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি, সেগুলো আমরা ভবিষ্যতে চাইব না। নতুন রাজনৈতিক দল যারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা আশা করব তারা মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত করবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, আজকে আমাদের এটা উপলব্ধি করতে হবে আমরা গণমাধ্যম জনগণের সেবার কাজে নিয়োজিত। আমরা দেশপ্রেমিক, সমাজকে উন্নত করতে চাই, বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, মত প্রকাশে বিশ্বাস করি এবং সমস্ত কাজ সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যেই। তবে এটা সত্য আমাদের গণমাধ্যম মুক্ত না । শেখ হাসিনা রিজিম জনধিককৃত হয়েছিল তার অন্যতম কারণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছিল না।
জা ই / এনজি