রাত ৯:৪৫ | বুধবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১লা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

হাসিনা ‘ফ্যাসিস্ট’ প্রমাণিত হওয়ায়   তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে  ——মির্জা ফখরুল 

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শেখ হাসিনা ‘ফ্যাসিস্ট’ প্রমাণিত হওয়ায় ভারত সরকার অবিলম্বে তাকে বাংলাদেশের কাছে ফেরত দেবে এবং তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে দলের এমন প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিঙে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, জাতিসংঘের যে পর্যবেক্ষন কমিটি এসেছিলেন… তাদের যে রিপোর্ট সেই রিপোর্টকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, তারা সঠিকভাবে বলেছেন যে, একজন ব্যক্তি বিশেষ করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশেই সমস্ত হত্যাকান্ডগুলো ঘটেছে… যে গণহত্যা হয়েছে তার নির্দেশে হয়েছে এবং যত মানবাধিকার লঙ্ঘন যা কিছু হয়েছে সব তার নির্দেশে এখানে হয়েছে। গণতন্ত্রকে ধবংস করে দেয়া, ইন্সটিটিউশগুলোকে ধবংস করে দেয়া আজকে সেটাই রিপোর্টে ফুটে এসেছে যে, তার নির্দেশেই হয়েছে।
 এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, হাসিনা একজন ফ্যাসিস্ট এবং তিনি এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছেন, নির্যাতন করেছেন, হত্যা করেছেন এবং তাকে(শেখ হাসিনা) অবিলম্বে আমরা আজকে এখান থেকে তাই বলছি, ভারত সরকার তাকে ফেরত দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের হাতে দেবে এবং তাকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে… তাকে এবং তার সহযোগী যারা ছিলো তাদের সবাইকে… এটাই হচ্ছে আমাদের প্রত্যাশা।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় আমরা স্বস্তি প্রকাশ করছি যে, সত্য যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো আজকে উঘাটন হয়েছে।প্রোভলেমটা হচ্ছে যে, জাতিসংঘ যখন বলে তখন আমরা সেগুলো সবাই বিশ্বাস করি।‘ যখন আমরা রাজনৈতিক দলগুলো বলি তখন অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না। যাই হোক আমি জাতিংসংঘের পপর্যবেক্ষন যে টিম এসেছিলো তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের অনুসন্ধানী দল।বুধবার জেনিভায় এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক ও অন্যরা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান তার পতাকাবাহী গাড়ি নিয়ে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এক ঘন্টা বৈঠক শেষে কার্যালয় থেকে তার গাড়ি বেরিয়ে যায়। এই বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সাথে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
‘তারেকের সাথে বৃটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষ্যৎ আজ’
মির্জা ফখরুল বলেন, বৃটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার আজকে এখানে এসেছিলেন। এটা পূর্বনির্ধারিত ছিলো। আজকে আবার কাকতালীয়ভাবে বৃটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের  সাথে লন্ডনে দেখা করবেন। কিছুক্ষন পরেই এই মিটিং হবে। আজকের এই মিটিংটা পূর্বে নির্ধারিত ছিলো, বৃটিশ হাইকমিশনার নেই সেজন্য ডেপুটি এসেছেন। আমাদের মধ্যে রুটিন আলোচনা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি, রাজনৈতিক অবস্থা, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছেন সেগুলো সম্পর্ক এবং কবে নির্বাচন হচ্ছে প্রভৃতি বিষয়গুলো সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, গুম হওয়া হত্যা করা এটা শুধু পার্টিকুলার কোনো দল নয়, এখানে(আয়না ঘরে) বাংলাদেশের মানুষকে গুম করা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে নির্মমভাবে… এই কথাগুলো আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। যখন আয়না ঘরের রিপোর্টটা বেরুয় আল-জাজিরাতে আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে … তখন কিন্তু এটা সরকার পুরোপুরি ডিনাই করেছে… তারা বলেছে যে, এই ধরনের কিছু নাই। কিন্তু প্রথম থেকেই এই কাজগুলো হচ্ছিল।
আপনার মানুষকে তুলে নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে জঙ্গি… সে জঙ্গি সংগঠন করছে এই ধরনের কথা বলে আটক করে নির্যাতন করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কথা বের করার চেষ্টা করেছে। কিছু লোককে তারা রেখে দিয়েছিলো যে, বিভিন্ন সময়ে তাদেরকেই দিয়ে জঙ্গি নাটক সাজাবে…ভুলে গেছেন নাকি আপনারা। একেকটা বাড়িতে জঙ্গির টেনিং হচ্ছে, পড়াশুনা হচ্ছে, জঙ্গিবাদ তৈরি করা হচ্ছে, বোম তৈরি করা হচ্ছে এসব দেখিয়েছে। কিন্তু আজকে প্রমাণিত হয়ে গেলো যে, আমরা যে কথাগুলো বলেছি সেগুলো সত্যি। আওয়ামী লীগ তাদের সরকার ওই সময় অত্যন্ত সচেতনভাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, গণতন্ত্রকে ধবংস করেছে এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা বিরোধী দলকে ধবংস করেছে।
জা ই/ এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *