রাত ৪:১৫ | বৃহস্পতিবার | ১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

সেবাপণ্যের ওপর আরোপিত কর অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন : এবি পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ জানুয়ারি ২০২৫

 

 

কোনো অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ না করে গত সপ্তাহে প্রজ্ঞাপন জারি করে ৬৫টি পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর এবং শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে অন্যায্য এবং অদূরদর্শী বলে মন্তব্য করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। এ ছাড়া সেবাপণ্যের ওপর আরোপিত কর অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে দলটি।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির নেতারা বলেন, যে সময় আওয়ামী লুটেরাদের ধ্বংস করে দেওয়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের আয়োজন চলছে, সে সময়ে মধ্য ও নিম্নবিত্ত স্বল্প আয়ের নাগরিকদের ওপর এ ধরনের পরোক্ষ করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এর ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পরিপন্থি।

একই সময়ে টিসিবির ট্রাকে পরিচালিত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কমদামে পণ্য বিক্রি বন্ধ করার সিদ্ধান্তকেও আত্মঘাতী বলে মনে করে এবি পার্টি।

 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন- এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সাবেক আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল ও অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এফসিএ, সহকারী সদস্য সচিব।

বক্তব্যে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, এবি পার্টি মনে করে জনগণকে কষ্ট দিয়ে বাজেটের ঘাটতি মেটানো আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইএমএফের ঋণ পাওয়ার জন্য সরকারের ব্যয় সংকোচন করা বেশি জরুরি। এক্ষেত্রে সরকারের সাইজ কমানো, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিলাসী সুযোগ-সুবিধা কর্তন, অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল বা কমানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

পাশাপাশি রাষ্ট্রকে তার বাৎসরিক খরচ মেটানোর জন্য শুধু প্রত্যক্ষ করের ওপর জোর দেওয়ার তাগিদ দেন এবি পার্টির নেতারা। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আয় বাড়ানোর জন্য প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্র ও পরিধি বাড়ানো জরুরি। ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের আমলে লুটেরা ও ডিজিটাল মডেলের যে অকার্যকর অর্থনীতি নির্মাণ করা হয়েছে, তা শুধু দুর্নীতিকে উৎসাহিত করেছে, মূল্যস্ফীতি বাড়িয়েছে, প্রবৃদ্ধির মিথ্যা ছেলে ভুলানো গল্প তৈরি করেছে যেখানে কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি, বেকারত্ব বেড়েই চলেছে। তাই হাসিনা আমলের তথ‍্য-উপাত্ত সংশোধন করে আমাদের মাথাপিছু আয়, বার্ষিক দেশজ আয় ও প্রবৃদ্ধির হার, আমদানি-রপ্তানি, ঋণের আসল পরিমাণ জাতির সামনে তুলে ধরা দরকার।

একই সঙ্গে অসত্য ও মিথ্যাচারের ওপর ভিত্তি করে জোর করে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ বানানোর চেষ্টা হিতেবিপরীত হবে।

এমতাবস্থায়, আমরা মনে করি যে, ক্রমান্বয়ে কমিয়ে ভ‍্যাট ব‍্যবস্থা পুরোপুরি বিলুপ্ত করে আয়-উপার্জন-মুনাফা ভিত্তিক একক প্রত‍্যক্ষ কর নীতিমালা ও ব‍্যবস্থাপনা তৈরি করা দরকার। কম সামর্থ্যের নাগরিকদের ভোগান্তিকে পুঁজি করে বাজেট বাস্তবায়ন করার আয়োজন সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফের সমাজ কায়েমের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ভ্যাট বাতিলের দাবি জানিয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগের লুটেরাদের মতো আচরণ আপনারা দেশের গরিব মানুষের সঙ্গে করবেন না। যেভাবে দিনকে দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে তার ওপর আবার নতুন করে ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে- তাতে জনগণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। আমরা আওয়ামী লীগকেও বলেছি, লুটপাট বন্ধ করেন, জনগণের জীবন সহজ করেন নইলে এই লুটপাটতন্ত্র ধসে পড়বে। আপনাদেরও সাবধান করছি, গরিব মানুষ মোড়ে মোড়ে এখন গাড়ির দরজায় টোকা দিচ্ছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করলে তারা কলার ধরে গাড়ি কেড়ে নেবে। দয়া করে জনগণের জীবন যাত্রা সহজ করার উপায় বের করুন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- এবি যুবপার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমাদ বারকাজ নাসির, উত্তরের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিপন মাহমুদ, আমেনা বেগম, নারী নেত্রী হাজরা মেহজাবিন, যুবনেতা শিবলু, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সিসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

 

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *