রয়টার্স, মস্কো
১৭ আগস্ট ২০২৪
রাশিয়ার কুরস্ক এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন লোকজন। তাঁরা বলছেন, ইউক্রেনীয় হামলার মুখে রুশ সেনারা তাঁদের রক্ষা করতে পারবেন না। ৬ আগস্ট থেকে রাশিয়ার ভেতরে কুরস্ক অঞ্চলে হামলা শুরু করে ইউক্রেন। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার কুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ দুটি সেতু ধ্বংস করেছেন ইউক্রেনের সেনারা। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, সেতু ধ্বংস করতে পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
রাশিয়ার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমার্স ব্যবহার করে সিম নদীর ওপরের সেতু ধ্বংস করা হয়েছে। এ হামলায় বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নিতে কাজ করা কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী নিহত হয়েছেন।
রুশ পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, প্রথমবারের মতো কুরস্কে পশ্চিমা রকেট লঞ্চার ব্যবহার করা হয়েছে। সম্ভবত এটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমার্স। গ্লুসকোভো জেলায় সিম নদীর ওপর তৈরি সেতু এ হামলায় ধ্বংস হয়েছে। তবে গত শুক্রবারের এ হামলায় কতজন নিহত হয়েছেন তা জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমার্স রকেট ৮০ কিলোমিটার দূর থেকে উৎক্ষেপণ করা যায়।
ইউক্রেনের সেনাপ্রধান আলেকসান্দর সাইরস্কি বলেন, কুরস্কের কিছু এলাকায় ইউক্রেনের সেনারা এক থেকে তিন কিলোমিটার এগিয়েছেন। রাশিয়ার ভেতরে ১১ দিন ধরে হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। ৬ আগস্ট থেকে রাশিয়ার ১ হাজার ১৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা ও ৮২টি সেনা স্থাপনা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে তারা।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল রুশ সেনারা বেশ কিছু ইউক্রেনীয় হামলা ঠেকিয়েছে। তবে কোনো এলাকা মুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেন কুরস্কের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করতে চায়। এ ক্ষেত্রে তাদের পশ্চিমারা সমর্থন দিচ্ছে; কিন্তু এ ধরনের হামলা করে যুদ্ধের গতি–প্রকৃতি বদলানো যাবে না।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এ যুদ্ধে তারা জিততে দেবে না। রুশ বাহিনী কুরস্ক অঞ্চলে পাল্টা হামলা চালাতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার ভেতরে এটাই সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা। রুশ সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার ভেতরে সুদজা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইউক্রেন।
রাশিয়ায় ইউক্রেনের হামলার ফলে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধের বিষয়ে কাতারে পরোক্ষ আলোচনার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, এ হামলার ফলে রাশিয়া এখন ন্যায্য দাবি নিয়ে আলোচনায় বসতে বাধ্য হবে।
টিআই/ এনজি