বিকাল ৩:৩২ | বুধবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১লা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারে ভূমিকম্প : ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকারা কাঁদছেন, খালি হাতেই চলছে বাঁচানোর চেষ্টা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৯ মার্চ ২০২৫

মিয়ানমারে গত শুক্রবার ভয়াবহ ভূমিকম্পে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)। ভয়াবহ এ ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন, বাঁচার জন্য সেখান থেকেই কাঁদছেন তারা। কিন্তু তাদের উদ্ধার করতে কোনো ভারী যন্ত্রপাতি আসেনি। এজন্য খালি হাতেই চলছে উদ্ধারের চেষ্টা। যদিও এরমাধ্যমে সবাইকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালয়। সেখান থেকেই এমন নির্মম তথ্য তুলে এনেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

হেতেত মিন নামে ২৫ বছর বয়সী এক যুবক রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর তার ওপর একটি দেওয়াল ভেঙে পড়ে। এতে তার অর্ধেক শরীর চাপা পড়ে যায়। তবে তিনি বেঁচে যান। কিন্তু ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে তার দাদি ও দুই চাচা। তিনি হাত দিয়েই ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। “ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু কোনো উদ্ধারকারী দল আমাদের এখানে আসেনি।”— এসব বলতে বলতে কেঁদে দেন হেতেত মিন।

মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমারে ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে খারাপ সময়ে। দেশটি গৃহযুদ্ধের কারণে এমনিতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এরমধ্যেই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ল তারা।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর শীলা ম্যাথিউ এক বিবৃতিতে বলেন, “শক্তিশালী ভূমিকম্পটি সবচেয়ে খারাপ সময়ে মিয়ানমারে আঘাত হেনেছে। তারা আরেকটি বিপর্যয়ের ভার বহন করতে পারবে না।”

আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটির মিয়ানমার পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াস বলেছেন, “পুরো দেশের মানুষ ‘ব্যাপক সহিংসতায়’ বিপর্যস্ত। গৃহযুদ্ধ, কলেরা ও অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা (আগেই) শোচনীয় হয়ে পড়ে। ভূমিকম্প এখন এটির ওপর আরও প্রভাব ফেলবে।”

যেসব অঞ্চল ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে সক্রিয় কোনো সরকারই নেই বলে জানিয়েছেন ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিয়ানমার অ্যাকাডেমিক নই নই কয়ো। তিনি আরও জানিয়েছেন, মিয়ানমারের জান্তা তরুণদের জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতে করে বেশিরভাগ অঞ্চলেই তরুণরা নেই। যা উদ্ধারকাজকে ব্যহত করছে। তিনি বলেছেন, যদি তরুণরা তাদের নিজ অঞ্চলে থাকত তাহলে উদ্ধার অভিযানে সবার আগে তারা এগিয়ে আসত। অন্যদের জড়ো করত। কিন্তু এখন এগুলোর কিছুই হচ্ছে না।

মিয়ানমারের জান্তার সঙ্গে উদ্ধার অভিযানের ব্যাপারে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে তারা কোনো উত্তর দেয়নি। অপরদিকে জান্তা বিরোধী সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট জানিয়েছে, আক্রান্ত এলাকায় তারা তাদের যোদ্ধাদের মোতায়েন করবে।

 

 

সূত্র: রয়টার্স / এনজি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *