রাত ২:৩৩ | বৃহস্পতিবার | ১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

নোয়াখালীতে বন্যা ও বৃষ্টির পানির চাপে ধসে পড়ল মুছাপুর রেগুলেটর

নিজস্ব প্রতিবেদক,নোয়াখালী

২৬ আগস্ট ২০২৪

উজান থেকে ধেয়ে আসা পানির চাপে ধসে গেছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটর । আজ সকালে তোলা
উজান থেকে ধেয়ে আসা পানির চাপে ধসে গেছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটর । আজ সকালে তোলাছবি: 

বন্যা ও বৃষ্টির পানির চাপে ধসে পড়েছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর স্লুইসগেট (রেগুলেটর)। পরে সেটি পুরোপুরি ধসে ছোট ফেনী নদীতে বিলীন হয়ে যায়। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি ও অতি বৃষ্টির পানির চাপ নিতে না পারার কারণে স্লুইসগেটটি ভেঙে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা মনে করছেন।

স্লুইসগেট ভেঙে যাওয়ার ফলে কুমিল্লার ডাকাতিয়া নদী হয়ে আসা উজানের পানি এবং চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, ফেনী সদর, দাগনভূঞা, সোনাগাজীর একাংশ এবং নোয়াখালীর সেনবাগ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জমে থাকা বন্যার পানি সন্দ্বীপ চ্যানেলে সহজেই নেমে যেতে পারবে। তবে সাগরের জোয়ারের পানিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার এবং ছোট ফেনী নদীতে নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি ও অতি বৃষ্টির পানির চাপ কমাতে কয়েক দিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ধারাবাহিক কাজের অংশ হিসেবে মুছাপুর স্লুইসগেটের ১৮টি দরজার সব কটি খুলে দেওয়া হয়। এতে প্রচণ্ড বেগে উজানের পানি এবং বন্যার পানি ছোট ফেনী নদী হয়ে সন্দ্বীপ চ্যানেলে নামতে থাকে। পানি নামার দৃশ্য দেখার জন্য অনেক উৎসুক মানুষজনও দুই-তিন দিন ধরে স্লুইসগেটের আশপাশে এবং ছোট ফেনী নদীর তীরে ভিড় করেন।

সূত্র জানায়, আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিকভাবে স্লুইসগেটের মাঝামাঝি স্থান দেবে যেতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যেই স্লুইসগেট পুরোপুরি দেবে যায়। এরপর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে এটি পানির চাপে ভেঙে পড়ে। স্লুইসগেট ভেঙে পড়ার পর ডাকাতিয়া নদী হয়ে আসা উজানের পানি প্রবল বেগে সন্দ্বীপ চ্যানেলের দিকে নামতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্লুইসগেট ভেঙে পড়ার কারণে সাগর থেকে আগের মতো নোনা পানি কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুরসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

পাউবো, নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির ফয়সাল  বলেন, উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি ও অতি বৃষ্টির চাপ নিতে না পারার কারণে স্লুইসগেটটি ভেঙে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে তাঁরা ধারণা করছেন। এর ফলে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, ফেনী সদর, দাগনভূঞা, সোনাগাজীর একাংশ এবং নোয়াখালীর সেনবাগ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার একাংশে জমে থাকা বন্যার পানি দ্রুত নামতে পারবে। পাশাপাশি সাগরে যখন বেশি জোয়ার হবে, তখন নোনা পানিতে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

পানির চাপ নিতে না পারার বিষয়টি স্লুইসগেট নির্মাণের ত্রুটি থেকে হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, নির্মাণত্রুটি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি আরও বড় করে নির্মাণ করা যায় কি না, সে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে।

পাউবো সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ছোট ফেনী নদীতে ‘মুছাপুর রেগুলেটর’–এর ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণ করেন। ২০০৯ সালে রেগুলেটরটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। নির্মাণকাজ শেষের ১৫ বছর না যেতেই রেগুলেটরটি ভেঙে পড়ল।

 

জা ই/ এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *