
জীবনে একটিবার অলিম্পিকের মত দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে অংশ নেয়ার আকাংখা থাকে কত কত অ্যাথলেটের। একটিবার অংশ নিতে পারলে গর্বিত হয়ে যায় সংশ্লিষ্ট অ্যাথলেট এবং তার পরিবার। সেখানে একবার-দু’বার নয়, প্যারিস অলিম্পিকে ১০মবারের মত অংশ নিতে যাচ্ছেন জর্জিয়ার ৫৫ বছর বয়সী এক শ্যুটার।
অদম্য এই অ্যাথলেটের নাম নিনো সালুকভাজে। তবে তিনি প্রথম নন, বিশ্বের দ্বিতীয় ক্রীড়াবিদ হিসাবে ১০ম বার অলিম্পিক গেমসে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি। জর্জিয়ার ৫৫ বছর বয়সী এই নারী শ্যুটার জানান, ‘এ মাইলফলক স্পর্শ করে তিনি বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে চান।’
১৯৮৮ সালের দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল অলিম্পিকে অভিষেক হয়েছিল তখনকার ১৯ বছরের নিনোর। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিনিধি হিসাবে সেখানে ২৫ মিটার পিস্তলে সোনা এবং ১০ মিটার পিস্তলে রুপা জিতেছিলেন তিনি।
মা এবং ছেলে- একসঙ্গে লড়াই করেছিলেন ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকে। যা অলিম্পিকে ইতিহাস।
এরপর একে একে বার্সেলোনা (১৯৯২), আটলান্টা (১৯৯৬), সিডনি (২০০০), এথেন্স (২০০৪), বেইজিং (২০০৮), লন্ডন (২০১২), রিও ডি জেনিরো (২০১৬) এবং টোকিও (২০২১) অলিম্পিকে অংশ নেন নিনো সালুকভাজে। বেইজিংয়ে ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। ১০ বার অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণ করে তিনি কানাডার ইকুয়েস্ট্রিয়ান ইয়ান মিলারের নজির স্পর্শ করেছেন।
অলিম্পিকের প্রস্তুতির ফাঁকে সংবাদ সংস্থাকে নিনো বলেন, ‘দশটা অলিম্পিক! মনে হচ্ছে একটা গোটা জীবন কেটে গেল। প্রথম অলিম্পিকের পর কখনও ভাবিনি আরও নয়টায় অংশ নেব। এতদিন কিভাবে খেলছি সেটা ব্যাখ্যা করতে গেলে একটা বই লেখা হয়ে যাবে। তবে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি সেটাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।’
সেই বইয়ে নিশ্চিতভাবেই বাবা ভাখতাংয়ের জন্য একটা অধ্যায় থাকবে। শুরু থেকে তিনিই নিনোকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। রিও’য় তিনি ছেলে সোৎনে মাকাভারিয়ানির সঙ্গে খেলতে নেমেছিলেন। অলিম্পিকের ইতিহাসে মা-ছেলের একসঙ্গে খেলার নজির সেটাই প্রথম। নিশ্চিতভাবে সেটাও তার জীবনের বড় একটা অভিজ্ঞতা।
ভেবেছিলেন, টোকিওয় হয়তো অভিযান শেষ হয়ে যাবে নিনোর। কেন হল না? নিনো বলেছেন, ‘টোকিওর পরে শুটিং ছেড়ে দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু ৯৩ বছর বয়সী বাবা বলল, প্যারিসের জন্য আর তিন বছর বাকি। আর একবার কোটা জেতার চেষ্টা করে দেখো। বাবা কোনওদিন আমার থেকে কিছু চাননি। হয়তো এটাই তার শেষ ইচ্ছা। নিজের সব শক্তি একত্র করে রাজি হয়েছিলাম। ছেলেও বলেছিল, যদি আমি হাল ছেড়ে দিই, তা হলে সেও ছেড়ে দেবে। তখন রাজি হয়ে যাই।’
আইএইচ/ এনজি