সকাল ১০:০৯ | বুধবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১লা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্তে কমবে প্রযুক্তি পণ্যের দাম

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
১৬ এপ্রিল ২০২৫

 

 

বাণিজ্যযুদ্ধে টানাপোড়েনের মাঝে মার্কিন প্রশাসনের এক সিদ্ধান্ত স্বস্তি এনে দিয়েছে প্রযুক্তি বিশ্বে। যুক্তরাষ্ট্রে চীন থেকে আমদানিকৃত স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য এবার পাবে শুল্ক ছাড়। এর ফলে অ্যাপল, ডেলসহ বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং শেষপর্যায়ে ভোক্তারা অনেকটাই স্বস্তি পাবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৫ এপ্রিল রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য এই শুল্ক অব্যাহতি কার্যকর হবে। এতে করে স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হার্ড ড্রাইভ, ডাটা প্রসেসিং যন্ত্রপাতি, সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস, মেমোরি চিপ এবং ফ্ল্যাট-প্যানেল ডিসপ্লেসহ অন্তত ২০টি পণ্য শ্রেণি তালিকাভুক্ত রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত অ্যাপল, ডেল, ইনটেল, নভিডিয়া, কোয়ালকমসহ শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিছুটা অর্থনৈতিক স্বস্তি এনে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ শুল্কের কারণে বাড়তি ব্যয় পণ্য মূল্যে যুক্ত হয়ে ভোক্তার কাঁধে চাপানোর শঙ্কা ছিল।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যদি শুল্ক ছাড় না আসত, তাহলে আইফোনের দাম ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেত। এমনকি হাই-এন্ড আইফোনের সম্ভাব্য দাম ২,৩০০ ডলারে গিয়ে ঠেকতে পারত।

এই শুল্ক ছাড়ের সিদ্ধান্ত প্রযুক্তি বিশ্বে একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে ধরা হচ্ছে। এতে শুধু মার্কিন বাজার নয়, বিশ্ববাজারেও সরবরাহ শৃঙ্খলা কিছুটা স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এখন থেকে তাইওয়ান থেকে আমদানি করা সেমিকন্ডাক্টর বা ভারতে তৈরি আইফোনের ক্ষেত্রেও খরচ কমবে। ফলে উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি ভোক্তারাও সাশ্রয়ী দামে পণ্য পেতে পারেন।

তবে এই ছাড় সব পণ্যের জন্য নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, এই শুল্ক ছাড় শুধুমাত্র ১২৫ শতাংশ ‘পাল্টা শুল্কের’ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত পুরনো ২০ শতাংশ শুল্ক এখনই প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আমরা শুল্কের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ আয় করছি। সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক পণ্য নিয়ে আমার পরিকল্পনার বিস্তারিত খুব শিগগিরই জানাবো।”

এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর কয়েকটি বড় প্রযুক্তি কোম্পানির সিইওদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এমনকি শপথ অনুষ্ঠানে অ্যাপলের টিম কুক, গুগল, মাইক্রোসফটসহ বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

মার্কিন সেন্সাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি আমদানিকৃত পণ্য ছিল স্মার্টফোন। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ল্যাপটপ। এই তথ্যই প্রমাণ করে প্রযুক্তি খাতে চীনা পণ্যের উপর মার্কিন নির্ভরতা ঠিক কতটা।

ট্রাম্প প্রশাসনের হঠাৎ এই শুল্ক ছাড় সিদ্ধান্ত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বস্তি দিলেও এর প্রভাব আরও অনেকদূর বিস্তার করবে বলে ধারণা করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। একদিকে যেখানে ব্যবসায়ীদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি হলো, অন্যদিকে ভোক্তারাও কিছুটা কম দামে তাদের কাঙ্ক্ষিত ইলেকট্রনিক পণ্য কিনতে পারবেন — বিশেষ করে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ।

 

 

শ ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *