নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ মে ২০২৫
ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করতে বাধাটা কোথায় নির্বাচন বিরোধিতাকারীদের কাছে জানতে চেয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, কারও দল গোছানোর জন্য নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে না। আজ ১৬ মে শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল মতীনেরে ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘শোষনমুক্ত সমাজ গঠনে মাওলানা আবদুল মতীনের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় হয়।
নজরুল বলেন, ঐক্যমত্য কমিশনের যিনি দায়িত্বে আছেন, প্রফেসর আলী রীয়াজ তিনি বলেছেন যে, মে মাসের মধ্যেই সব রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনাক্রমে তারা একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারবেন। যেখানে বুঝা যাবে যে কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবে সবগুলো রাজনৈতিক দল একমত, কোন কোন সংস্কারের প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত আছে, এটা আমরা বুঝে ফেলতে পারব। মে মাসের মধ্যে বুঝে ফেলতে পারলে, জুন মাসের মধ্যে এই কাজটা কি সম্ভব না, যেসব প্রস্তাব সবাই আমরা একমত সেটা একত্র কইরা একটা সনদ তৈরি কইরা আমরা সবাই সেখানে স্বাক্ষর করলাম এবং সবাই একমত হলাম যে, সংস্কারগুলো অবিলম্বে কার্য্কর করা হোক। আইনের মাধ্যমে অধ্যাদেশের মাধ্যমে যেটা করা যাবে সেটা এখনই হবে। যেটা সংবিধানে পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে সেটা আগামী নির্বাচিত সংসদে হবে। সবাই একমত হয়ে দস্তখত করে দিলাম আমরা এবং সেই অনুযায়ী আগামী দিনে কাজ চলবে। এই কাজটা যদি জুন মাসের মধ্যেই সম্ভব হয়, এমনকি যদি জুলাই মাসের মধ্যে সম্ভব হয় তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে বাধাটা কোথায়?
নজরুল ইসলাম খান প্রশ্ন রেখে বলেন, কারো গোছানোর সময় দরকার? কারো বন্ধু জোগাড়ের জন্য কিছু সময় দরকার? সেজন্য জনগনের ভোট দেয়ার যে মৌলিক মানবাধিকার এটা বিলম্বিত হবে। এটা তো হতে পারে না। আমরা মনে করি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এটা অত্যন্ত যৌক্তিক এবং এর বিরুদ্ধে যৌক্তিক কোনো প্রস্তাব বা কোনো বক্তব্য কেউ হাজির করতে পারি নাই। নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নাই। এটা যত দ্রুত আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বুঝবেন তত ভালো।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, লেবার পার্টি বলেছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনটা হোক। আমি বলতে চাই, যারা এটা বিরোধিতা করছেন তারা শুধু বলুন যে, কোন যুক্তিতে ডিসেম্বরের পরে করতে হবে নির্বাচন। কারণটা কি? নির্বাচন কমিশন বলেছে, জুন মাসের মধ্যে তারা জাতীয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবে, এই জুন মাসের মধ্যে। তাহলে নির্বাচন কমিশনের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে কোনো অসুবিধা নাই।
তিনি বলেন, অনেকে সংস্কারের কথা বলছেন। সংস্কার আপনারা কে কি বলেন? আপনারা কবে থেকে সংস্কারের কথা বলেন? শহীদ জিয়াউর রহমান তো ১৯৭৬-৭৭ সালে ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। বড় সংস্কারের কর্মসূচি দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে। ২০২৩ সালে ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি রাষ্ট্র মেরামতের কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করেছি। আমরা যে প্রস্তাব করেছি এর বাইরে কোনো সংস্কার প্রস্তাব এই সরকার উত্থাপন করে নাই। কাজেই সংস্কারের বিষয়ে বিএনপির চেয়ে অগ্রনী ভূমিকা বাংলাদেশের আর কোনো রাজনৈতিক দল, আর কোনো শক্তি উপস্থাপন করে নাই। আমরা সংস্কারের বিপক্ষে না, আমরা পরিপূর্ণভাবে সংস্কারের পক্ষে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রশ্ন যেটা সেটা হলো, সংস্কার কি একবারে শেষ করার বিষয়? পরিবর্তনের দুইটা পথ একটা বিপ্লব, আরেকটা সংস্কার। আপনি বৈপ্লবিক পরিবর্তন হলে খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যায়। আর সংস্কার একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে হয়, সকলের সম্মতিতে হয়। বিশেষ করে যারা স্টেকহোল্ডার তাদের সম্মতিতে হয়। সংস্কার প্রস্তাবগুলো আমাদের মতামত দেয়া হলো, আমরা মতামত দিলাম, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন গঠন করা হলো সেই কমিশন আমাদের সাথে আলোচনা করেছেন, আমরা আমাদের মতামত ব্যক্ত করেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে মহানগর সভাপতি এস এম ইউসুফ আলীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, নাজিম উদ্দিন আলম, মুসলিম লীগের কাজী মোঃ আবুল খায়ের, লেবার পার্টির এডভোকেট জোহরা খাতুন জুঁই, খন্দকার মিরাজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জা ই / এনজি