জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৭ এপ্রিল ২০২৫
স্বাধীনতার পরবর্তী এখন পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী কিংবা ইসলামী দলের কোনো নেতাকর্মী হিন্দুদের ঘর-বাড়ি দখল করেনি, পূজামণ্ডপ বা তাদের ধর্মীয় উপাসনলায় ভাঙেনি বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের পূজামণ্ডপ ভেঙে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে কদমতলী মধ্য থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এতদিন আওয়ামী লীগের জুলুম-নির্যাতনের ভয়ে হিন্দুরা কথা বলতে পারেনি। ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগের পতনের মাধ্যমে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতায় এ দেশের মানুষ কথা বলতে পারছে। সেই সঙ্গে হিন্দুরাও এখন স্বীকার করছে, বিগত সময়ে তাদের ওপর আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্যরা জুলুম করেনি।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারাসহ ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নেতারা গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রকাশ্যে স্বীকার করে গেছেন, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর জামায়াতে ইসলামী কিংবা ইসলামী কোনো দলের নেতাকর্মীরা জুলুম করেনি, বরং ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্ট সরকারবিহীন রাষ্ট্রে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সম্পদ পাহারা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা সংগ্রাম করে জানিয়ে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নয়, সমাজের কোনো মানুষের ওপর জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জুলুম করেনি, করবে না। বরং জামায়াতে ইসলামী এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করার কারণে বারবার জামায়াতে ইসলামীর ওপর রাষ্ট্রীয় মদদে জুলুম নির্যাতন করা হয়েছে।
আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর লড়াই চলবেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী যদি ভারতীয় আধিপত্যবাদের কাছে মাথানত করতো তবে দলের আমির, সেক্রেটারি জেনারেলসহ শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি বরণ করতে হতো না। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা ফাঁসি মেনে নিয়েছে, ভারতীয় আধিপাত্যবাদ মেনে নেয়নি, নেবে না। জামায়াতে ইসলামী একমাত্র দল যারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জীবন দিয়েছে, তবুও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিক্রি করতে দেয়নি। অথচ যারা নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলে গলাবাজি করে তারাই ক্ষমতার জন্য ভারতীয় আধিপত্যবাদের কাছে স্বাধীনতাকে বর্গা দিয়েছে। বর্গা দেওয়া স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। ছাত্র-জনতা সেই স্বাধীনতা ৫ আগস্ট ফিরিয়ে এনেছে।
জামায়াত একটি মানবিক সমাজ গঠন করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেই সমাজে মারামারি, হানাহানি, নৈরাজ্য, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দুর্নীতি থাকবে না। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে মূল্যায়ন করা হবে না, প্রতিটি মানুষ দেশের নাগরিক হিসেবে সমানভাবে মূল্যায়িত হবে। এটাই ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। একটি কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণ জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার। সেই রাষ্ট্র বিনির্মাণে তিনি দলমত, ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
জা ই / এনজি