নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
দেশ চলছে না বলে মন্তব্য করেছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে আজ শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্বাধীন বাংলা মাদক বিরোধী কল্যাণ সোসাইটি’র উদ্যোগে ‘মাদক মুক্ত দেশ ও জাতি গঠনে করনীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, এখন যে সরকার আছে সেই সরকার থেকে আপনি কি আশা করেন? কারণ এই সরকার যে কি করতে চায় আমিও বুঝি না। আর তারা নিজেরাও জানে কিনা, বুঝে কিনা বুঝে কিনা তারা কি করতে চায়। তারা একটা গোলক ধাঁন্দার মধ্যে পড়েছেৃ. সংস্কার সংস্কার করতে করতে সব পরিস্কার হয়ে গেছে গা। কিন্তু রাষ্ট্র চলছে না। আপনি বিভিন্ন ব্যবসা কেন্দ্রে যান, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে যান, আপনাদের ফাইট আটকিয়ে রেখেছে। আবার যাদের বিল আটিকয়ে রেখেছে তাদের মধ্যে অর্থাৎ আওয়ামী লীগের আমলে যারা কাজ করছে তাদের বিল কিন্তু ঘুরাচ্ছে না।
গয়েশ্বর বলেন, পারজেইজ এন্ড প্রকিউরমেন্ট যে নীতি আছে তাতে আছে ৫ বছর বা ১০ বছরের অভিজ্ঞতা লাগেৃ ৫ বছর বা ১০ বছর সময়ের অভিজ্ঞতা তো আওয়ামী লীগের আমলেরৃ কারণ এতো যারা এসব করতে পারেনি তারা কিন্তু কোনো সুযোগ পাচ্ছে না, তারা টেন্ডার ক্রয় করারও কোনো সুযোগ পাচ্ছে না, নতুনরা কোনো প্রতিযোগিতার সুযোগ পাচ্ছে না। তাহলে সরকারই এসব দেখেও কি করছে? তারা আগের জিনিসই আগের জায়গায় রেখেছে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এই যে একটা সরকার ১৬টা বছর থাকলো তারা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়েই ওই সরকারের লোকজনরা লুটপাট, দুর্নীতি করেছে, ওই প্রশাসনের লোকেরা কিন্তু যার যার জায়গায় এখনো বলে আছে। তারা শ্রেনী স্বার্থেই তো সব দুর্ণীতি এখনো চলমান আছে। প্রশ্নটা হলো যে, এখন তো দেখা যাচ্ছে আগের যেসব কাজ-কর্ম চলেছে, যেসব অন্যায় নিয়ম-নীতি তৈরি করা হয়েছে তা দিয়ে তো চলছে। বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রেও বিগত সরকারের রেখে যাওয়া বিষয়গুলো নিয়ে অন্তর্বতীকালীন সরকার এগুচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি এই নেতা।
নির্বাচন জরুরী উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটা কথা বলতে চাই, ১৭ বছর মানুষ কেনো নিপীড়ন-নির্যাতন-গুম-খুন-মিথ্যা মামলায় পড়লো কেনো মানুষ এতো রক্ত দিলো। তার ভোটারাধিকার, তার স্বাধিকার ফেরত পাওয়ার জন্য। আমার মনে হয়, একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করা ছাড়া এই সরকারের অন্য কোনো দায়িত্বের প্রতি আগ্রহ সন্দেহ জনক। এই নিয়ে জনগনের মধ্যে অবিশ্বাস, বিভ্রান্তি, অনাস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।
নির্বাচনটা যে জরুরী এই বিষয়টা সরকারকে বুঝতে হবে। এই বিষয়টা মাথায় রেখে রাজনৈতিক বিষয়টা রাজনীতিবিদদের হাতে ছেড়ে দেয়াটাই ভালো। আর রাজনীতিবিদরা কারা ক্ষমতায় যাবে সেটা জনগনই নির্ধারণ করবে, তাদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। জনগন কিন্তু জনসভা করে নাৃ তারা মনে মনে এক হয়ে যায় নাকি। ওই গানের মতো ‘পাগল মন মন কেনো এতো কথা, আশি তোলায় হইলে চল্লিশ সেরে মন, মনে মনে এক মন না হইলে মিলবে না ওজন’। সুতরাং জনগন কিন্তু ওজন মিলাইয়া ফালায়।
মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে হলে করণীয় ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, আমরা যদি মাদকমুক্ত একটা সমাজ গড়তে পারি তাহলে আমাদের ভবিষ্য যুবক-তরুণরা দেশের স্বাধীনতা বলেন, সার্বভৌমত্ব বলেন এ বিষয়ে তাদের যদি দায়িত্বরোধ না আসে তাহলে আজকে যারা আছে তারা যেমন থাকবে না, দেশটা ধবংস হয়ে যাবে। নতুন প্রজন্ম যদি মাদকে আসক্তি হয়ে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আগামীর দেশটাকে কে চালাবে?। আপনি দেখেন, আজকে যারা স্বচ্ছল আছেন, ভালো আছেন তারা বা তাদের ছেলে-মেয়েরা দেশে পড়ালেখা করছে না, তারা দেশ ত্যাগ করতে চায়। আমাদের দেশ থেকে মেধা কিন্তু পাচার হয়ে যাচ্ছে। কেউ বাংলাদেশে থাকতে চায় নাৃ যে পরিবেশ বিরাজ করছে সেই পরিবেশে থাকতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে বিদেশে পড়ালেখার জন্য আমাদের যুব সমাজ গেলে তারা বিদেশে থেকে যেতে চায়। মাদকমুক্ত দেশ গড়তে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান তিনি।
সংগঠনের সভাপতি সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মহানগর দক্ষিন যুব দলের আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, স্বাধীন বাংলা মাদক বিরোধী কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি সেলিম নিজামী প্রমূখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
জা ই / এনজি